চন্দন দত্ত রায়
কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছে নিজের উষ্ণতা সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে বাতাস যখন তার হিমশীতল স্পর্শ সঙ্গে নিয়ে আপনাকে ছুঁয়ে চুপি চুপি বলবে, ওগো আমার খুব জার লাগছে গো! তোমার থেকে আমাকে একটু উষ্ণতা দাও না! আপনি যতই চেষ্টা করুন না দেবার, আপনার উষ্ণতার ভাগ আপনাকে তাকে দিতেই হবে। সেই সঙ্গে আপনিও #জার কে অনুভব করবেনই।
হ্যাঁ, এইরকমই একজায়গায় ঘুম ও বাতাসিয়া লুপ। দার্জিলিং হিমালয়ান হেরিটেজ রেলওয়ের সমতল থেকে ৭৪০৭ ফুট ওপরে দার্জিলিং শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরত্বে ভারতীয় রেলের সর্বোচ্চ রেল স্টেশন।
এককালে ব্রিটিশরা এই অপরূপ সৌন্দর্যময় দার্জিলিংকে তাদের গ্রীষ্মকালীন অবসর যাপনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে।
হ্যাঁ যা বলছিলাম, ট্রয় ট্রেন যখন ঘন কুয়াশা মোড়া ঘুমের দেশ ঘুম স্টেশনে এসে দাঁড়ায়, এক অনাবিল আনন্দের অনুভূতি আপনার শরীরে শিহরণ জাগিয়ে তুলবেই।আপনি অনুভব করবেনই সেই শীতল স্পর্শ। পায়ে পায়ে এগিয়ে দেখে নিতে পারেন ঘুম মনাস্ট্রি। এই ঘুম থেকেই আপনি পেয়ে যাচ্ছেন গ্যাংটক, কালিংপং, মিরিক যাওয়ার রাস্তা। আবার এখান থেকেই যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে নয়ন সার্থক করে দেখার জায়গা টাইগার হিলের পথ।
এবার চলুন আপনাকে নিয়ে যাই বাতাসিয়া লুপে। ছোট্ট খেলনা রেলগাড়িটা যখন কু ঝিক ঝিক করে হুইসেল বাজিয়ে সবূজ ঘাসে মোড়া নানা রঙের ফুলের বাগানে চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে এগিয়ে আসবে দাঁড়াবে আবার পাক খেয়ে চলে যাবে, আপনি মন্ত্রমুগ্ধের মত চেয়ে থাকবেন। আর যদি আপনি ওই ট্রেনের সাওয়ারি হন তাহলে তো কোনও কথাই নেই।
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে অসাধারণ দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন যে গোর্খা সেনারা, তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এখানে আছে এক অনন্য সাধারণ শহিদ স্তম্ভ।
দার্জিলিং গেছেন ঘুম, বাতাসিয়া যাননি এরকম পর্যটক মনে হয় খুব কমই আছেন। বাতাসিয়া থেকে দার্জিলিংয়ের আংশিক যে অংশ দৃশ্যমান হয় তা এক কথায় অসাধারণ এক ল্যান্ডস্কেপ।
তাহলে আর কী! চলুন পাহাড়ের রানি দার্জিলিংয়ে।
ছবি— লেখক
(সমাপ্ত)