সৌগত পাল

লেখাটা শুরু করার আগে ভাবছিলাম লিখব কী। নদীর নামে স্টেশনের মধ্যে এটা রাখা চলবে কিনা। কারণ যে স্টেশনের কথা হচ্ছে সেটা ঠিক নদীর নামে স্টেশন নয়। নদীর উপর ব্রিজের নামে। শেষমেষ দেখলাম, নদী যখন উপস্থিত তখন লিখতে কোনও বাধা নেই।
এ স্টেশনও সাহেবগঞ্জ লুপ লাইনের। আগের দু’টো লেখা স্টেশনের মতো (কোপাই আর গুমানি) এটিও ছোট্ট একটা স্টেশন। স্টেশনের নাম বাঁশলৈ ব্রিজ। আর নদী বাঁশলৈ। প্রথম দেখে বা শুনে একটা কথাই মাথায় ঘুরছিল। এই নদী কাকে বাঁশ দিল। পরে জানলাম, বাঁশের উৎস। মানে বাঁশ নামে একটা পাহাড় থেকে এর উৎপত্তি। সে পাহাড় আছে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলায়। সেখান থেকে এই নদী বীরভূম জেলা ছুঁয়ে মুর্শিদাবাদে পৌঁছেছে। জঙ্গিপুরের কাছে এই নদী ভাগীরথী নদীর উপনদীতে পরিণত হয়েছে।

স্টেশনের সামনে যে নদীকে দেখেছি তার খাত খুব সরু। নদীর উপর রেলব্রিজ আর তার পাশাপাশি রাজ্য সড়কের জন্য তৈরি ব্রিজ। নদীর জলের পরিমাণ আর স্রোত দুই নেই বললেই চলে। তাই নদীর মাঝে মাঝে ছোট ছোট চর জেগে উঠেছে। কেবল বর্ষাকালে নদীর রূপ পালটে যায়। তখন চরগুলো ডুবে যায়। চরে জন্মানো লম্বা ঘাসেরা মাথা তুলে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়।

বাঁশলৈ স্টেশন ছোট্ট ছিমছাম একটা স্টেশন। সারাদিনে কয়েক জোড়া ট্রেন। তবে যাত্রী সংখ্যা বেশ ভালই হয়। আপ আর ডাউন মিলিয়ে দু’টো প্ল্যাটফর্ম। তবে প্ল্যাটফর্ম এখনও কাঁচা। স্টেশনের আশেপাশে অনেক দূর অবধি চাষের জমি দেখতে পাওয়া যায়।
স্টেশন থেকে বেরিয়ে রাজ্য সড়কে উঠলে বেশ কিছু দোকান চোখে পড়ে। ভাতের হোটেল থেকে ফাস্টফুড, ফলের দোকান আর জামাকাপড়ের দোকান সব। এই স্টেশনের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে এখানে সকালের ট্রেনে প্রচুর মানুষ ঝুড়ি ভরে কলা নিয়ে যান বিক্রিরজন্য।

বাঁশলৈ থেকে হাওড়ার দিকের প্রথম স্টেশন হল মুরারই। আর মালদার দিকের স্টেশন হল রাজগ্রাম।
(সমাপ্ত)