দীপক দাস
সমীক্ষায় সাফল্য আসে। একটা তুল্যমূল্য বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। এই সিদ্ধান্ত উপকার করে। আমরা আগে উপকার পেয়েছি। তাই বহড়ু স্টেশনে নেমেই সমীক্ষা শুরু হল। ঠিক নেমেই নয়। ট্রেন থেকে নেমে প্রথম কাজ ছিল, জার্সিটা পরে নেওয়া। এখানে ভেক ধরতেই হবে। না হলে প্রচুর কৈফিয়ত দিতে হয়। ভেক ধরলে কাজ অনেকটা সহজ হয়। জার্সি পরার পড়ে সমীক্ষা। ঠিক সমীক্ষা নয়। এলাকার বাইরে মতামত নেওয়া। কার দোকানের মোয়া বেশি ভাল। এলাকার বাইরে যে নাম পৌঁছেছে সেই সুনামের কিছু উৎস থাকে।
মোয়ার খোঁজেই আমরা বেরিয়েছি। জয়নগরের মোয়া বিখ্যাত। আমরা খোঁজ পেয়েছিলাম, নামে জয়নগর জুড়ে থাকলেও মোয়ার আসল উৎস বহড়ু। তাই শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে বহড়ু স্টেশনে নামা। মোয়া সফরে একটা তাৎপর্য আছে। অনেকদিন পরে আমাদের ঘুরনচাকি দলের গ্রাম এবং শহর শাখার একযোগে সফর হচ্ছে। ভাঙা দল যদিও। গ্রাম-শহর দুই শাখারই। শহর শাখার শুধু কচি ওরফে শুভ বৈদ্য চেন্নাই থেকে ফিরে দলে যোগ দিয়েছে। বাকিরা ব্যস্ত জীবনের পথে।
বহড়ু স্টেশনে বসেছিলেন এক যাত্রী। মাঝ বয়সি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, কার মোয়া ভাল? ভদ্রলোক বললেন, মহাদেব দাসের। দোকানের অবস্থানও জেনে নেওয়া হল তাঁর কাছে। স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে বাহন খোঁজা। সেখানে আরেক প্রস্ত খোঁজ। কয়েকজন ভ্যানচালকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। আরেকটা নাম বেরোল, শ্যামসুন্দর। একজন বললেন, এক টিভি চ্যানেলে গিয়েছিল শ্যামসুন্দর। আরেকজন বললেন সেই মহাদেব দাসের কথা। এটাই বহড়ুর সবচেয়ে পুরনো দোকান। একে পুরনো, তায় দু’বার শোনা নাম। ঠিক হল মহাদেব দাসের দোকানেই যাওয়া হবে। পরে শ্যামসুন্দরে।
উঠে বসলাম প্যাডেল করা ভ্যানে। দীপুর, ইন্দ্রর ভার ভ্যান বইতে পারবে কিনা সন্দেহ ছিল। ওরা পিছনে বসতে চেয়েছিল। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ওদের সামনের দিকে পাঠালাম। পিছনের ভারে সামনের চাকা গগনমুখী হলেই মুশকিল। আমি আর কচি বসলাম পিছনে। কষ্ট হচ্ছিল ভ্যানচালকের। কিন্তু কী আর করা! তিনি আমাদের মহাদেব দাসের দোকানের সামনে নামিয়ে দিলেন। দোকানের নাম ‘বীণাপানি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’। ঠিকানা বহড়ু কলুর মোড়, জয়নগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বেশ সাজানো গোছানো দোকান। শোকেসে থরে থরে মোয়ার প্যাকেট সাজানো। বোঝাই যায়, ভাল চলে। ভ্যানচালক থাকতে চেয়েছিলেন। যদি দোকানের মালিক সহযোগিতা করেন আমাদের কথা তাহলে শেষ হবে না। তাই ভ্যানচালককে ছেড়ে দেওয়া হল।
দোকানেই ছিলেন মহাদেব দাস। ক্যাশে ছিলেন। আসার উদ্দেশ্য জানাতে সাদরে আহ্বান জানালেন। বাকিদের ছবি তোলার দায়িত্ব দিয়ে ঢুকে গেলাম দোকানে। আমাদের গুটিকয়েক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার দরকার ছিল। বহড়ুতে কে প্রথম তৈরি করেছিলেন মোয়া? এত স্বাদু খাদ্যটি কেন নিজের জন্মস্থানের নাম পেল না? সেই সময় থেকে এই সময়ে এসে মোয়ায় কী কী সংযোজন, বিয়োজন হয়েছে? আর খুব আগ্রহ ছিল কনকচূড় ধান এবং সেই ধানের খই দেখার। এই ধানের সুখ্যাতি শুনেছি খুব। কনকচূড় ধানের খই ছাড়া এখানকার মোয়া হয় না। ধানের উৎপাদন এখন নাকি কমে গিয়েছে। খইচুরের খোঁজে খানাকুলে গিয়েছিলাম। সেখানকার মোদক জানিয়েছিলেন, কনকচূড় ধান পাওয়া যায় না বলে খইচুর করা বন্ধ হয়েছে। যেটুকু ধান হয় তা চলে যায় জয়নগরে। মোয়ার জন্য।
কথা শুরু হল। মহাদেব দাস এক অজানা ইতিহাস জানালেন আমাদের। সে ইতিহাস লড়াইয়েরও। মোয়াকে জন্মস্থানের অধিকারে ফিরিয়ে আনার লড়াই। সত্তরোর্ধ মহাদেববাবু জানালেন, জয়নগরের মোয়া বলে যা পরিচিত তা প্রথমে বহড়ুতেই তৈরি হয়েছিল। বহড়ুর মোয়ার বয়স ৮০ বছর বা তার বেশি হবে। কে প্রথম করেছিলেন তা জানা যায় না। শুধু ভাসা ভাসা কয়েকটি নাম পাওয়া যায়। কোনও নামই নিশ্চিত নয়। দোকানে ছিলেন শচিন হালদার। তিনি শিবু কয়াল, ধনঞ্জয় হালদা, বৈদ্যনাথ পুরকাইতের নাম বললেন। এঁরা প্রথম পর্বের মোয়ার কারিগর। এখন আর গ্রামে থাকে না এই দুই পরিবারের সদস্যরা। বাইরে চলে গেলেও তাঁরা মোয়া তৈরি করেন এখনও।
তবে কেন জয়নগরের নাম পেল মোয়া? মহাদেববাবু বললেন, জয়নগর পুরসভা এলাকা। সিনেমা হল আছে। নিমপীঠ আশ্রম আছে। লোকজনের আনাগোনা বেশি। বহড়ু তো তখন একেবারে গ্রামীণ এলাকা। তাই মোয়ার কারিগরেরা জয়নগর গিয়ে এই এলাকার নামেই মোয়া বিক্রি করতেন। জয়নগরে রাধাবল্লভের মেলা হয়। এই মেলাতেও বিক্রি হত বহড়ুর মোয়া। এখনও হয়। বহড়ু গ্রামের পরিচয়েও জয়নগর লেগে আছে। বীণাপানির ঠিকানাতেও। কারণ জয়নগর থানা এলাকার মধ্যে বহড়ু। শচিনবাবু আরেকটি তথ্য দিলেন। রাধাবল্লভ মন্দিরে পঞ্চমীর দোল উপলক্ষে চাঁচড়ের মেলা হয়। মেলায় বাস ভাড়া করে বাইরে থেকে ভক্তরা আসেন। বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকেও। বাইরের লোকজন কলসি করে মোয়া কিনে ঘরে ফিরতেন। রাধাবল্লভের প্রসাদ হিসেবে। এলাকার বাইরে, এমনকি ভিন রাজ্যে এই কারণেই বহড়ুর মোয়া জয়নগরের নামেই পরিচয় পায়। তখন কলসি করে বিক্রির ব্যবস্থা ছিল।
মহাদেববাবুর বাবা অমূল্যচরণের সময়ে তাঁরাও জয়নগরের মোয়া হিসেবেই বিক্রি করতেন। কলকাতায় বিক্রি করতে যেতেন। খিদিরপুর, মনসাতলা, ডায়মন্ডহারবার রোড, তারাতলা, বাবুঘাটে জয়নগরের মোয়া হিসেবেই ফেরি করতেন বহড়ুর সম্পদ। মহাদেববাবু তখন ছোট। বাবার সঙ্গে যেতেন। কাঠের ট্রেন। বাবার চার আনা টিকিট। মহাদেববাবুর দু’আনা। বাবা মারা যাওয়ার পরে কলকাতায় আর যাননি। প্রথমে চায়ের দোকান করেন। তার পর তেলেভাজা। পরে মিষ্টির দোকান মা বীণাপাণির নামে। মোয়া বিক্রির সময়ে একটা আক্ষেপ জাগত মহাদেববাবুর। বহড়ুর মোয়া অথচ জয়নগরের নামে বিক্রি করতে হবে!
বহড়ুর মোয়া নামেই বিক্রি করতে শুরু করলেন মহাদেব দাস। খবর চলে গেল জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে (ডিআইসিও)। ডিআইসিও থেকে বিডিও-র মাধ্যমে আধিকারিক এলেন। আধিকারিক জানতে চাইলেন, এক জায়গার মোয়া কেন মহাদেববাবু আরেক জায়গার নামে বিক্রি করছেন? মহাদেববাবু জানিয়েছিলেন, নিজের গ্রামে তিনি বহড়ুর মোয়া হিসেবেই বিক্রি করবেন। দু’টাকা করে পিস হিসেবে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলেন। তাঁকে বিডিও-তে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। আধিকারিক জানালেন, ইন্টারভিউ দিতে হবে তাঁকে। কী কী লাগে, কী ভাবে তৈরি হয়, কতটা বিক্রি হবে সব জানাতে হল লিখিত ভাবে। এক সপ্তাহে পরে আবার ডাক এল। এবার মোয়া তৈরির ইন্টারভিউ। দেখাতে হল কী ভাবে কতটা তৈরি হয়। কত লাভ থাকে। শেখানোও হল তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজনকে। পরে ডাক এল শিল্পভবন থেকে। সেখানেও আরেক প্রস্ত হাতে কলমে দেখানো। শেখাও।
পরে রাজ্য সরকার থেকে চিঠি দিয়ে ভিক্টোরিয়ার পাশে শিল্পমেলায় মোয়ার স্টল দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয় মহাদেববাবুকে। ১৯৯০ সালে মেলায় যোগ দিলেন। বিরাট ব্যানার দিয়ে স্টল দিলেন। মোয়ার সঙ্গে পাটালি, সন্দেশও ছিল। ২৪ বছর মেলা করেছিলেন। পরে মেলা চলে গেল সল্টলেকে। দূর হয়ে যাওয়ায় আর মেলায় যোগ দেননি তিনি। ততদিনে বহড়ুর মোয়ার নাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। মহাদেববাবুর দোকানের পরিচয়েও বহড়ুর মোয়া লেখা। এই এলাকায় সব মিষ্টির দোকানে বহড়ুর মোয়া লেখা রয়েছে।
মহাদেববাবু মোয়া তৈরির পদ্ধতি জানালেন। খেজুরের গুড়ে হিসেব মতো চিনি মিশিয়ে পাক করতে হয়। পাক নামিয়ে তাতে মেশাতে হয় গাওয়া ঘি। একটু ঠান্ডা হলে গুড়ে খই দিয়ে ভাল করে মেশানো হয়। মেশানো হয়ে গেলে তার উপরে আবার গুড় পড়ে। যাতে খই নরম হয়। এবার মণ্ডে খোয়া ক্ষীর, কাজু বাদাম, কিসমিস দেওয়া। তার পর গোল্লা পাকাতে হয়। গোল্লা পাকানোর সময়ে হাতে ঘি মেখে নেন কারিগরেরা। গোল্লার উপরে একটা করে কাজু আর কিসমিস দিয়ে উপরে ক্ষীরের গুঁড়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কাজু বাদাম আর খোয়া ক্ষীর আদি পর্বের মোয়ায় ছিল না। পরে যোগ হয়েছে। আগে মোয়ায় পেস্তা দেওয়া হত। এলাচও। তিন ধরনের দামের প্যাকেট পাওয়া যায় মহাদেববাবুর দোকানে। ১০০, ১৫০ এবং ২০০ টাকার। ১০টি মোয়ার প্যাকেট সব।
শীতের তিন মাস মোয়া তৈরি হয়। কনকচূড় ধানের খই লাগে মোয়া তৈরিতে। এই ধান চাষ হয় রায়দিঘি, কাশীনগরে। কাশীনগরে ধানের হাট হয়। মোয়ার দোকানগুলো এই হাট থেকে ধান সংগ্রহ করে। গুড়ের হাট হয় বহড়ুতে। সোম ও শুক্রবার রাত ৩টে থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত। মোয়ার কারিগর বা অন্য মিষ্টির দোকানদারেরা টর্চের আলো ফেলে দেখে গুড় কেনেন। এই এলাকা ও আশপাশের শিউলিরাই গুড় আনেন হাটে। তবে বড় দোকানগুলোয় শিউলি ধরা থাকে। মোয়ার কারিগর যাঁরা বাইরে গিয়ে ব্যবসা করছেন তাঁরাও হাটে গুড় কিনতে আগের দিন রাতে চলে আসেন।
কী ভাবে মোয়া তৈরি হয়? দেখতে গেলাম মহাদেববাবুদের কারখানায়। সেখানে ছিলেন মহাদেববাবুর ছেলে গণেশবাবু। তিনি ঘুরিয়ে দেখালেন সব কিছু। কারখানার এক জায়গায় পাকশাল। সেখানে হেডমিস্ত্রি গোপাল খাঁয়ের তত্ত্বাবধানে চলছে পাক সংক্রান্ত যাবতীয় কিছু। পর কড়াইয়ে গুড়ের পাক তৈরি। কেউ খই মেশাচ্ছেন গুড়ে। গোপালবাবু জানালেন, একটা কড়াইয়ে ছ’কেজি গুড়ে আড়াই কেজি খই মেশে। এক কড়াইয়ে ১৬-১৭ কেজি মোয়া তৈরি হয়। এক কেজি মোয়া হয় ২০ পিসে। পাকশালার সামনে পাটালি তৈরি হচ্ছে। পাশের একটা ঘেরা জায়গায় ড্রাম ড্রাম গুড় রাখা। বাঁধা শিউলিরা দিয়ে যান গুড়। গণেশবাবু জানালেন, হাট থেকে গুড় কিনে ব্যবসা করা মুশকিল। কারণ তাঁদের প্রতিদিন যা গুড় লাগে তা জোগাড় করতে অন্তত ২০টি শিউলির কাছে ঘুরতে হবে। ভাল গুড় না হলে মোয়ার মান ভাল হবে না। তাই বাঁধা শিউলির ব্যবস্থা। পাকশাল থেকে একটু পিছিয়ে বাড়ির বাঁধানো উঠোনে মোয়া প্যাকেট বন্দির কাজ চলছে। উপরে প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া। প্যাকেট বন্ধ করার আগে তাতে কাজু আর কিসমিস বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আমার কনকচূড় ধান দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। দলও ইচ্ছেয় সম্মতি দিল। মহাদেববাবুর নাতি আশিস নিয়ে গেলেন গ্রামের ভিতর দিকে একটি বাড়িতে। যেতে যেতে জানলাম যেখানে খই ভাজা হচ্ছে সেটা আশিসের মামার বাড়ি। খই ভাজছেন চরু কয়াল। তিনি আশিসের দিদিমা। খই ভাজা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। দিদিমা বুঝিয়ে দিলেন আমাদের। রাত ১২টার সময়ে উঠে খই ভাজা শুরু করেন। পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চলবে ভাজা। খই ভাজার আগে ধান তৈরি করার পদ্ধতিটাও দীর্ঘ। রোদে ধান শুকোতে হয়। বিকেলে তুলে নিয়ে আবার রাতে শিশিরে রাখতে হবে। সারারাত শিশির খাওয়ার পর ধান তুলে নেওয়া হয়। তার পর দু’দিন ফেলে রাখা। খই ভাজা হয় তার পর।
খই ভাজার পরে চালার ব্যবস্থা। একটু দূরে এক খামারে চালাঘরে খই চালা হচ্ছিল। খই চালছিলেন চন্দনা কয়াল আর শোভনা হালদার। বিশাল চালুনিতে কাজ চলছিল। চেলে বেরনো না ফোটা ধানগুলো এক জায়গায় জড়ো করে রাখা। তাঁরা জানালেন, এগুলো হাঁস-মুরগির খাবার হবে। এখানে একটা জিনিস জানা গেল। অসাধু ব্যবসায়ীরা কনকচূড়ের সঙ্গে মারিশশাল ধানের খই মিশিয়ে দেন। দিলে কিন্তু মোয়ার স্বাদ ও গন্ধে প্রভাব পড়বে। বড় দোকানগুলো এই সুনামের সঙ্গে আপস করে না। আমরা দেখে এলাম কনকচূড় ধান শুকোনোর জায়গাটাও। ধানের একটা লম্বা লেজ আছে। এটাই কনকচূড় ধানের বৈশিষ্ট্য।
ফিরতে ফিরতে একটা কথা মনে হচ্ছিল। ভাল কিছু করতে গেলে অনেক যোগ থাকা দরকার। ভাল কারিগর হলেই ভাল মোয়া হবে, তা কিন্তু নয়। সচিন তেন্ডুলকরের প্রতিভা ছিল। কিন্তু তাঁরও দরকার পড়েছিল দাদা অজিত এবং কোচ রমাকান্ত আচরেকরের। মোয়া অনেক জায়গাতেই তৈরি হয়। কিন্তু বহড়ু বিখ্যাত হল কেন? কারণ এই যোগ। কাছাকাছি এলাকার উর্বর জমিতে হয় কনকচূড় ধান। এলাকার গুড়ের মান ভাল। গুড়ের বাজারও কাছে। এত সব যোগেই বহড়ুর মোয়া স্বাদে, গন্ধে অতুলনীয় হয়েছে। আর প্রচার সচিবের কাজ করেছেন রাধাবল্লভ। তাঁর মেলা।
মহাদেববাবুদের আন্তরিকতায় সবকিছু দেখে এবং খেয়ে মন ভরে গিয়েছিল। আমাদের খাইয়েছিলেন ওঁরা। বাড়ির জন্যও কিনেছিলাম। কিন্তু আক্ষেপ একটাই, প্রথম কে তৈরি করেছিলেন সেটা জানা গেল না। ওইদিনে মোল্লার চকে গিয়েছিলাম। সেখানে এক প্রাক্তন মিষ্টির কারিগরের কাছে শুনেছিলাম, বুঁচকি নামে কোনও একজন নাকি প্রথম মোয়া তৈরি করেছিলেন বহড়ুতে। এ নাম বহড়ুতে শুনিনি। মোয়ার ভগীরথের সন্ধান মেলা মুশকিল!
কভারের ছবি— মোয়া ও মহাদেব দাস
ছবি- দীপু, ইন্দ্র, কচি ওরফে শুভ
(সমাপ্ত)