দীপক দাস
‘কলকাতা থেকে মধুপুরের দূরত্ব…’। ছোটবেলার সেই আতঙ্কের অঙ্ক। ‘অঙ্কে তেরো’ বহু বুরুন বইয়ের সেই ট্রেনকে আঁক কষে মধুপুরে পাঠাতে পারত না। আঁকের গোলমালে ট্রেনের যাত্রীদের যে কী অবস্থা হত! আমাদের কোনও গোলমাল হয়নি। ট্রেন মধুপুরের দিকে এগোচ্ছিল। কিন্তু যত সময় যাচ্ছিল আমরাই যেন ট্রেনের কবল থেকে নিজেদের বাঁচাতে চাইছিলাম। শেষপর্যন্ত তো নেমেই পড়েছিলাম ট্রেন থেকে।
পুজোর সফরের পরিকল্পনা হচ্ছিল চতুর্থী নাগাদ। ইন্দ্র, দীপু আর আমি মুখোমুখি। গার্ডবাবু সৌগত হোয়াটসঅ্যাপ-ফোনে। চাইবাসা, মধুপুর শিমুলতলার মাঝে দোল খাচ্ছিল সিদ্ধান্ত। কিন্তু ফেরার ট্রেনের কমতি দেখে বাতিল হল চাইবাসা। ঠিক হল, শিমুলতলায় যাওয়া হবে। বাঙালির সেই সুখ্যাত পশ্চিম। ট্রেনের তালিকা দিয়েছিল গার্ডবাবুই। ষষ্ঠীর দিন আমার অফিস। তাই রাতের ট্রেন ধরতে হবে। এ দিকে কোনও এক্সপ্রেসে টিকিট নেই। যেতে হবে ভেঙে ভেঙে। এ দিকে পুজো স্পেশাল বর্ধমান দেবে সপ্তমীর রাত থেকে। ঠিক হল, তৎকাল বা শেষমুহূর্তের অবিক্রিত টিকিট হাসিল করতে পারলে মোকামায় মোকাম। না হলে বর্ধমান মেমু ধরা। হাওড়া থেকে ছাড়বে রাত ১.৫০ মিনিটে। বর্ধমান থেকে লিঙ্ক ট্রেন ধরে আসানসোল। সেখান থেকে শিমুলতলা। আমি অফিস থেকে হাওড়া পৌঁছে যাব। ইন্দ্র, দীপু আর বাবলা সাড়ে ৮টার আমতা লোকাল ধরে হাওড়া আসবে।
বাকুলিয়া ঝরনা।
সাড়ে ১১টার মধ্যে আমি হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমতা লোকাল সেদিন অঙ্ক বইয়ের মধুপুরের ট্রেন হয়ে উঠেছিল। ঢিকিয়ে ঢিকিয়ে আসতে আসতে থেমে গেল পাঁচিলপাড়া স্টেশনে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথে টিকিয়াপাড়ার পরের স্টেশনই হাওড়া। কিন্তু সেটা টাইম টেবিল অনুযায়ী। এর মাঝে অলিখিত দু’টো স্টেশন রয়েছে। একটা এই পাঁচিলপাড়া। পাঁচিলের ধার ঘেঁষে দাঁড়ায় বলে এমন নাম। আরেকটি চানঘরতলা। এখানে ট্রেনেরা চান করে। লোকাল ট্রেনগুলোকে এই দু’টো জায়গায় দাঁড় করিয়ে মার খাওয়ান রেল কর্তৃপক্ষ। রোজকারের গল্প। কিন্তু ষষ্ঠীর রাতে মার যেন গণপিটুনির পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। একটা স্টেশন পার করতে সময় নিল এক ঘণ্টা।
টিলার গা বেয়ে চলেছে ঝরনার জলে তৈরি জলধারা।
ট্রেন ততক্ষণে তিন নম্বরে দিয়েছে। আমি টিকিট কেটে প্ল্যাটফর্মে ঢোকার মুখে তিনজনের জন্য অপেক্ষায়। এ দিকে পুরো ট্রেনে ঠাঁই নাই অবস্থা। সব কটা কামরা ঘুরে একটা তুলনামূলক কম ভিড়ে ওঠা হল। ট্রেনের অবস্থা দেখেই ইন্দ্রর মুখ গম্ভীর। ও চিরকাল আরাম ও খাবার প্রিয়। চেষ্টা করলাম কাছাকাছির যাত্রীর। কিন্তু ব্যান্ডেলের আগে মিলল না। দুর্ভোগের তখনও বাকি ছিল। এ ট্রেন রোজ হাওড়া থেকে ছেড়ে ব্যান্ডেলে থামে। তার পর একেবারে বর্ধমানে। পুজোর সময় বলে ব্যান্ডেল পর্যন্ত সব স্টেশনে ট্রেন থামবে। নামে অতিরিক্ত সময় দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এদিকে আমার রাতের খাওয়া হয়নি। দীপু খাবার এনেছে বাড়ি থেকে। কিন্তু খাওয়ার উপায় নেই। ও বলছিল, প্ল্যাটফর্মে নেমে খেয়ে আসতে। ট্রেন ছাড়তে তখনও আধ ঘণ্টা দেরি। কিন্তু সে ঝুঁকি নিতে পারিনি। তখনও যাত্রীরা আসছেন। একবার নামলে ট্রেন ছাড়ার আগে উঠতে নাও পারা যেতে পারে। অগত্যা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অতি সাবধানে তিনজনে খেয়ে নিলাম। লোকের গা বাঁচিয়ে। ইন্দ্র ততক্ষণে আসনে একটা নিতম্ব ঠেকানোর মতো জায়গা পেয়েছে।
চটিয়া পাহাড়ের উপর থেকে দেখা উপত্যকা।
ট্রেনে আমরা লোকজনের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করি। যাতে গন্তব্যের কাছাকাছি কোনও বাসিন্দা মেলে। তাতে এলাকায় ঘোরাফেরায় সুবিধা হয়। এবার ভাব জমাচ্ছিলাম বর্ধমান থেকে আসানসোল যাওয়ার লিঙ্ক ট্রেনের সহযাত্রীর খোঁজে। খোঁজ করতে গিয়েই আশ্চর্য সন্ধান। কেউ বলেন, অন্ডাল যাবেন। কেউ ঝাঁঝা। কিন্তু এ ট্রেন তো যাবে বর্ধমান পর্যন্ত। এঁদের বাড়ি কোথায় তো জানতে চাইনি। লোকগুলো রসিক নাকি বদমাশ! এক যাত্রী জানালেন, এই ট্রেনই আসানসোল যাবে। সে কী কথা! হাওড়া-বর্ধমান মেমু যে এটা। সহযাত্রী জানালেন, বর্ধমান থেকে এটাই আসানসোল হয়। আজও হতে পারে। একবার আমাদের থেকে জেনে নিলেন, ট্রেনের কামরায় সিঁড়ি লাগানো আছে কিনা। সিঁড়ি হলে নিশ্চিত আসানসোল। ট্রেন বদলানোর ঝক্কি পার করতে হবে না জেনে আমরা খুশি।
জঙ্গলের মধ্যে জেগে থাকা পাথর খণ্ডটা তৈরি করেছে আশ্চর্য রূপ।
বর্ধমানে মিনিট চল্লিশেক থেমে ট্রেন আসানসোল গেল। সেখানে গিয়ে শুনি, এই ট্রেনই কিছুক্ষণ থেমে জসিডি যাবে। আসানসোল থেকে ট্রেন ছাড়ল। যত এগোতে লাগলাম ততই আশ্চর্য হওয়ার পালা। এই ট্রেনই নাকি জসিডি থেকে আবার ঝাঁঝা পর্যন্ত যাবে। তার পর কোথাও যাবে কিনা কেউ বলতে পারলেন না। কারণ ঝাঁঝার পরের যাত্রী পাইনি আমরা। আমাদের অবস্থা তখন কিছুটা রাবীন্দ্রিক। সেই কীসে যেন রবি ঠাকুর লিখে গিয়েছিলেন, আমাদের কোনও অতীত নেই, ভবিষ্যৎ নেই। আছে শুধু বর্তমান। সেটাই বেড়ে বেড়ে চলেছে। আপাতত ঝাঁঝা পর্যন্ত সীমা বর্তমানের।
পানানিয়া নদী।
রাত জাগা, পেট ভরে খেতে না পাওয়া আমাদের অবস্থা তখন কাহিল। বোঁদে এনেছিল দীপু। বাবলা পরোটা। সে সব খোলা যায়নি জায়গার অভাবে। হাত ব্যাগে যা ছিল তা দিয়েই পেটকে শান্ত করে রাখা হয়েছে। এদিকে জলও ফুরিয়ে এসেছে। আসানসোলে জলত্যাগ করেছি। কিন্তু জলযোগ হয়নি। শৌচালয়ে গিয়ে গা-টা গুলিয়ে উঠেছিল। এই ট্রেনের একটাই ভাল, বদলের ঝক্কি নেই। কিন্তু সেই ভাল আর আমাদের সহ্য হচ্ছিল না। এ ট্রেনে শিমুলতলা গেলে নেমে প্ল্যাটফর্মেই শুয়ে পড়তে হবে। আধমরা ঘর খোঁজারও শক্তি থাকবে না। ঘোরাঘুরি দূরের কথা। ঠিক হল, মধুপুরে নেমে যাব আমরা। পরদিন যাব শিমুলতলা।
নেমে পড়লাম মধুপুর। বাঙালির একসময়ের অন্যতম স্বাস্থ্যনিবাস। প্ল্যাটফর্মে নেমেই ইন্দ্র বলে উঠল, এক ট্রেনে ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছি মনে হচ্ছিল। ড্রাইভারকে বললে হয়তো রাজস্থানে রওনা হয়ে যাবে।’’ তাও কি কম সফর হল? লোকাল ট্রেনে ঝাড়খণ্ড ঘুরতে আসা যে!
বাকুলিয়া যাওয়ার পথে পড়েছিল লাল কুঠি। একসময়ে বাঙালির ছিল। বলছিলেন টোটোচালক সাব্বির।
স্টেশন থেকে বেরোতেই এক টোটোচালক নিজে থেকেই এগিয়ে এলেন। নাম মহম্মদ সাব্বির। অতি ভদ্র। ঘরের খোঁজে আমাদের প্রথমে নিয়ে গেলেন রামকৃষ্ণ মিশনে। সেখানে নিয়মের কড়াকড়ি। থাকতে চাইল না সঙ্গীরা। আরেকটু এগিয়ে এক হোম স্টেতে খোঁজ নেওয়া। বাঙালি মালকিনের ছেলে দু’দিনের বুকিং না হলে ঘর দিতে রাজি নন। তাতে নাকি লোকসান হবে তাঁদের। এমন শর্ত দেখিনি কোথাও। পালিয়ে গিয়ে উঠলাম মা কোঠিতে। গেস্ট হাউসের যে অংশটা ভাড়া নিলাম সেটা অনেকটা ফ্ল্যাটের মতো। একটা রান্নাঘর রয়েছে। মালিক জানালেন, রেঁধে দেওয়ার লোকও রয়েছে। শুধু রেশনটা কিনে এনে দিতে হবে। দুপুর আর রাতের খাবার ঠিক করা হল। দুপুরে ভাত, ডাল আর আলু চোখা। রাতে হবে রুটি মাংস। কাছেই ওঝা পার্কের মোড়ে মুদিখানার দোকান। দোকান ও গেস্ট হাউস অবাঙালির।
পরিত্যক্ত দুর্গামন্দির।
খেয়েদেয়ে সাব্বিরকে ডেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়া। আসার সময়েই ঘোরার জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। প্রথম গন্তব্য হল, বাকুলিয়া ঝরনা। জায়গাটা নারায়ণপুরে। মালভূমির গ্রাম্য প্রকৃতি দেখতে দেখতে এগনো। বাকুলিয়া ঝরনায় জল এখন নাকি কম। তবুও বড় বড় পাথরের উপর দিয়ে রাস্তা করে যে জলধারাটিকে এগোতে দেখলাম তার তেজ কম নয়। বর্ষায় নিশ্চয় আরও তেজ বাড়ে। তবে কিছুটা নেমেই ঝরনার বেগ শান্ত হয়ে গিয়েছে। সেখানে অবশ্য পাথরের ভাগ কম। পাথর যা আছে সেসব জলধারার অপর পাড়ে। বহু যুগ ধরে জলধারা পাথর ক্ষয় করে নিজের জায়গা করে নিয়েছে। পাড়ে ছোট ছোট গাছ। সুন্দর সুন্দর বুনো ফুল ফুটে রয়েছে কয়েকটি গাছে। জলধারাটি কিছুটা এগিয়েই ডান হাতি বাঁক নিয়েছে। টিলার চারিদিকে গরু চরাচ্ছিলেন কয়েকজন। ঝরনার জলে তেষ্টা মেটাতে দেখলাম কয়েকটিকে।
প্রবল ফটোশ্যুট হল কিছুক্ষণ। তার পর ফেরা। বাকুলিয়া ঝরনায় লোকজন আসেন। কারণ পঞ্চায়েত থেকে খানতিনেক বসার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে টিলার উপরে। একটা নলকূপও বসানো হয়েছে। কিন্তু তার জল খেতে বারণ করলেন সাব্বির। ভাল নয়।
বাড়ির নামফলকে লেখা সাধু সঙ্ঘ। ইংরেজিতেও লেখা রয়েছে। এও বাঙালির ছিল।
পরের গন্তব্য চটিয়া পাহাড়। পাহাড়ে ওঠার সময়েই কাঠ কাটার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। তবে কাউকে দেখতে পাইনি। বেশ উঁচু জায়গায় ওঠার পরে দীপু একবার শিয়াল শিয়াল বলে চেঁচিয়ে উঠল। কিছুক্ষণ পরে ইন্দ্রও বলল, শিয়ালের কথা। উপত্যকা ধরে এগিয়ে চলেছে। একটা নয়, দু’টো শিয়াল। হয় আমাদের আওয়াজ পেয়ে পালাচ্ছে। নয়তো সন্ধের নামার আগে শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। চটিয়া পাহাড় থেকে উপত্যকাটা দেখতে বেশ সুন্দর। দূরে গাছের জটলার ফাঁকে কয়েকটা ঘরবাড়ি। একটা পাড়া। আরও দূরে একটা সেতু। ক্ষুদ্র অবয়বে গাড়ি পার হতে দেখা যাচ্ছে। অক্টোবরের গোধূলিতেই দূরে হালকা কুয়াশার ছাপ।
ফেরার সময়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম পানানিয়ার কাছে। একটা নদী। এ নামে কাছে একটা গ্রামও রয়েছে। পানানিয়ার বুকে সংকীর্ণ সেতুতে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হচ্ছিল। প্রায় জলহীন নদী। স্থানীয় এই নদীটি সম্ভবত বর্ষার বা কোনও ঝোরার জলে পুষ্ট। একজন চারণভূমি থেকে ঘরে ফেরার পথে নদীর বুকে মোষ চান করাচ্ছিল।
এখানেই আমাদের প্রকৃতি দেখা শেষ। এর পরে আমরা যা দেখেছি তা বাঙালির হাতছাড়া হয়ে যাওয়া সাম্রাজ্যের এক ভগ্নাবশেষ। কখনও তার রূপ পরিত্যক্ত বা দখল হয়ে যাওয়া বাড়ি। কখনও দুর্গামন্দির রূপে। একসময়ে জাঁকিয়ে পুজো হত। এখন সেই স্মৃতি বুকে নিয়ে ক্ষইছে। কোথাও বাড়ি হয়ে গিয়েছে বাচ্চাদের স্কুল। কাপিলা আশ্রমও অবশ্য দেখেছিলাম।
তৎকালীন বিহার, এখনকার ঝাড়খণ্ডের দেওঘর জেলার মধুপুর কী ভাবে বাঙালির স্বাস্থ্যনিবাস হল? শোনা যায়, রেলপাতার সময়ে এক ঠিকাদার মধুপুরের জলের গুণ টের পান। তিনি বসতি স্থাপন করেন। অন্য বন্ধু, পরিচিতদেরও ডেকে আনেন। ছুটিছাটা কাটানোর জন্য তৈরি করেন বাড়ি। এ সব বাড়ির রূপ প্রায় এক। একতলা আবাস। বাড়ির সামনে কুয়ো। পাঁচিল ঘেরা বাড়ির হাতায় বাগান। আর বাড়িঘরের সারা বছরের দেখভাল করতেন স্থানীয় কোনও আদিবাসী। এখানে বহু স্বনামধন্য বাঙালি ঘর করিয়েছিলেন। একসময়ে তাঁদের আনাগোনা বন্ধ হল নানা কারণে। পড়ে থাকা বাড়িগুলোতে চুরি ডাকাতি হতে শুরু করল। অনেকেই বিক্রি করে দিলেন তাঁদের সম্পত্তি। ধীরে ধীরে বাঙালির সাম্রাজ্য চলে যেতে লাগল অবাঙালিদের হাতে। আমরা ঘোরাঘুরির পথে লাল কুঠি, রৌশন প্যালেস, চম্পা কুঠি, সাধু সঙ্ঘ নামে যে সব বড় বড় বাড়ি দেখেছি সেসবই ছিল বাঙালিদের। একটা বাড়ি নাকি রাজবাড়ি ছিল। এখন তার কিছুটা নার্সিংহোম আর কিছুটা হয়েছে গেস্ট হাউস। সাব্বির এবং আমাদের গেস্ট হাউসের মালিক, দু’জনেই বলছিলেন এখানকার বেশির ভাগ বাড়ি ছিল বাঙালিবাবুদের। গেস্ট হাউসের মালিক অবশ্য বলছিলেন, বাঙালি দাদাদের। এমনকি তাঁর গেস্ট হাউসটির মালিকও ছিলেন এক বাঙালি দাদা।
কাপিল আশ্রমে। এখানেও রয়েছে বাঙালির ছোঁয়া।
শুনে বেশ দুঃখই হয়েছিল। বাঙালি কোনও ব্যবসা বা সংগঠন বাঁচাতে পারে না নিজেদের খেয়োখেয়িতে। প্রবাসে সাম্রাজ্যও রাখতে পারে না।
মধুপুরে শুধু টিকে আছে কোনও বাঙালি দাদার বুঝতে পারা জলের গুণটি। গেস্ট হাউসে বোতলবন্দি জলের ব্যবহার। কিন্তু আমরা মাটির নীচের জলই খাচ্ছিলাম। রাস্তায় একটা গভীর নলকূপ থেকে ভরে নিয়েছিলাম। তাতে মাংস, বাবলার বাসি পরোটা, বোঁদে সব হজম। রাত্রি জাগরণের পরেও চার বাঙালি যুবাকে অম্বল কাবু করতে পারেনি। গেস্ট হাউস থেকে মাটির নীচের জলই বোতল ভর্তি করে স্টেশনে হাজির হয়েছিলাম। শিমুলতলার ট্রেন ধরব বলে।
কভারের ছবি— বাকুলিয়া ঝরনা
ছবি— ইন্দ্র, দীপু
(সমাপ্ত)