দীপক দাস ‘কলকাতা থেকে মধুপুরের দূরত্ব…’। ছোটবেলার সেই আতঙ্কের অঙ্ক। ‘অঙ্কে তেরো’ বহু বুরুন বইয়ের সেই ট্রেনকে আঁক কষে মধুপুরে পাঠাতে পারত না। আঁকের গোলমালে ট্রেনের যাত্রীদের যে কী অবস্থা হত! আমাদের কোনও গোলমাল হয়নি। ট্রেন মধুপুরের দিকে এগোচ্ছিল। কিন্তু যত সময় যাচ্ছিল আমরাই যেন ট্রেনের কবল থেকে নিজেদের বাঁচাতে চাইছিলাম। শেষপর্যন্ত তো নেমেই পড়েছিলাম […]
বিশেষ ভ্রমণ
কুমোরপাড়ার গল্পস্বল্প— কালো পুতুলের পাড়া
দীপক দাস উপড়ুনি মাটির কথা শুনিনি কখনও। এ মাটি আবার বিক্রি হয়। ৮০ টাকা কিলো। সামসের আলি বিক্রি করছিলেন। ঘাটালের চন্দ্রকোনা থেকে এসেছিলেন মাটি বিক্রি করতে। উপড়ুনি মাটি লাগে কুমোরপাড়ায়। মাটির জিনিসপত্র রোদে শুকিয়ে পুড়িয়ে নেওয়ার আগে এলামাটির প্রলেপ লাগিয়ে নিতে হয়। তার উপরে পড়ে উপড়ুনি মাটির প্রলেপ। তবেই ভাল মতো পুড়ে মাটির জিনিসপত্র লাল […]
বর্ষার সহ্যাদ্রি- মহাবালেশ্বর
ডঃ শ্রাবনী চ্যাটার্জি “হারিয়ে যেতে যেতে অজানা সঙ্কেতে ছাড়িয়ে গেছি সেই পথ, কখনো মেঘে ঢাকা, কখনো আলো মাখা ভুলেছি ভবিষ্যত’। পঞ্চগনি থেকে মহাবালেশ্বর যাওয়ার রাস্তায় এই গানটাই আমার মাথায় ঘুর ঘুর করছিল। এমন ছায়া ছায়া জঙ্গলে ঢাকা রাস্তা, হঠাৎ ছুটে আসা মেঘের চাদর আর কুয়াশার আবছায়া হাতছানি। গাড়ির কাচে বৃষ্টির কণার আঁকিবুকি আর আবছা উপত্যকার […]
বর্ষায় সহ্যাদ্রি- পঞ্চগনি
ডঃ শ্রাবনী চ্যাটার্জি ভেজা বাতাস যেই পশ্চিম সমুদ্র থেকে বর্ষার আগমনবার্তা বয়ে আনে অমনি মন ময়ূরের মতো নেচে ওঠে। ইট-কাঠ-কংক্রিটের জঙ্গলে একঘেয়ে ধারাবর্ষণের মাঝে সহ্যাদ্রি যখন ছুটির চিঠি পাঠায় তখন তার ডাকে সাড়া না দেওয়ার আর উপায় থাকে না। তাই কর্তা-গিন্নি আবার এক ভোরে বেরিয়ে পড়ি। এবারের গন্তব্য পঞ্চগনি। ভিজতে ভিজতে এক অনন্য সফর। ব্রিটিশদের […]
বর্ষার সহ্যাদ্রি- মাথেরান
ডঃ শ্রাবনী চ্যাটার্জি বর্ষায় সহ্যাদ্রি সত্যিই সুন্দর। কী যে তার রূপ তখন সে যে না দেখেছে তাকে বলে বোঝানো মুশকিল। একে আমরা বাঙালিরা পাহাড় বললেই সটান হিমালয় পাড়ি দিই। অন্য কোনও পাহাড়কে হিসেবের মধ্যেই ধরি না। আমিও সেই দলেই ছিলাম। সবেমাত্র দু’টি বছর হল বৃষ্টিভেজা সহ্যাদ্রিকে দেখেছি আর দেখে তার প্রেমেও পড়েছি। ট্রয় ট্রেনে যেতে […]
বিদ্যাসাগরের পৈতৃক ভিটে হুগলির বনমালিপুরে
দীপক দাস বীরসিংহের সিংহপুরুষ তিনি। আমরা ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি। আর বীরসিংহ গ্রামটি মেদিনীপুরে। জেলা ভাগের পরে এখন পশ্চিম মেদিনীপুরে। কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পারিবারিক শিকড় আসলে বনমালিপুরে। এ গ্রাম আবার হুগলি জেলায়। কোথায় যেন পড়েছিলাম। তার পর খোঁজখবর। সে বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। স্মৃতি থেকে মুছেও গিয়েছিল বিদ্যাসাগরের পৈতৃক ভিটে। মাস ছয়েক আগে হঠাৎ ইন্দ্রজিৎ […]
কুমোরপাড়ার গল্পস্বল্প— কালো কলসির পাড়া
দীপক দাস খুব সম্ভবত লালুপ্রসাদ যাদব তখন রেলমন্ত্রী। তাঁর রেলমন্ত্রক একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। রেলের প্রতিটি স্টেশনে চায়ের দোকানগুলোয় মাটির ভাঁড়ে চা বিক্রি করতে হবে। এটা ২০০৪ সালের ঘটনা। লালুপ্রসাদ সফল হননি। প্লাস্টিকের কাপেই চা দেওয়া চলত রেলের জায়গার চায়ের স্টলে। স্টেশনে স্টেশনে ‘চা গ্রম’ হেঁকে বেড়ানো চাওয়ালারাও প্লাস্টিকের কাপই ব্যবহার করতেন। লালুপ্রসাদের পরে আবার চেষ্টা […]
কুমোরপাড়ার গল্পস্বল্প— রানিপুতুলের কাহিনি
দীপক দাস পাড়ায় ঢোকার মুখে চোখে পড়ে পণটা। গোলাকার উনুনের মতো। কিন্তু বিশাল। কুমোরপাড়া বোঝা যায় যে কয়েকটা চিহ্ন দিয়ে পণ তার অন্যতম। এতেই কুম্ভকারদের তৈরি মাটির জিনিসপত্র পোড়ানো হয়। পাড়ায় ঢুকতেই পণ দেখতে পেয়ে ভালই লাগল। তার মানে মাটির কাজ হয় এখনও। হাওড়া জেলার কুমোরপাড়াগুলো ঘোরার ইচ্ছে হয়েছিল একবার। সেই সূত্রেই জগৎবল্লভপুর ব্লকের নরেন্দ্রপুরে […]
মহামারিতে জনশূন্য জনপদ আর মসজিদ-দরগার খোঁজে
ফারুক আবদুল্লাহ ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের কথা। একটি জার্নালে মুর্শিদাবাদের কিছু বিস্মৃতপ্রায় মসজিদ নিয়ে লেখার জন্য পুরনো নথিপত্র ঘাঁটাঘাটি করছি। জেলার পুরনো জনপদগুলি খোঁজার জন্য। মনে হয়েছিল পুরনো জনপদের খোঁজ পেলে পুরনো মসজিদের সন্ধানও পেয়ে যেতে পারি। একদিন মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার ঘাঁটতে গিয়ে ‘চুনাখালি’ নামের এক পুরনো জনপদের খোঁজ পাই। চুনাখালি আমার বেশ পরিচিত এলাকা […]
মুররাবুরুর জঙ্গলা পাথর তাড়িয়ে ফিরছিল
সৌরভ দাস একটা শ্যাওলারঙা টি-শার্ট আর নেভি ব্লু জিন্স পরে পেরিয়ে যাচ্ছিলাম শালের জঙ্গল। ইতিউতি পিয়াল-মহুয়া ও পলাশের শাখা প্রশাখার বিস্তার। মাটির রং লাল। রুক্ষ্ম কাঁকুড়ে। মালভূমির ঢালুতলের উতরাইয়ের রাস্তা। পিছনে পাখিপাহাড়। ওই রেঞ্জেরই নিম্নতলে মুররাবুরুর জঙ্গল। মার্চের মাঝামাঝি, বেলা আড়াইটে। ঘাড়ে, কপালে ঘাম ফুটে উঠছিল। ফলে টি-শার্টটাও যাচ্ছিল ভিজে। কিন্তু ঘামের গন্ধ ছাপিয়ে উঠছিল […]