শ্রেয়সী সেনশর্মা ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ‘আরে ম্যাডামজি ৬০০ রুপিয়া’। হাওড়ায় দাঁড়িয়ে হতভম্ব আমি। কাঁধে একটি নীল রঙের ট্রেক ব্যাগ, আর বাবার পুরোনো ট্রলি হাতে, যাতে এ কে সেনশর্মা লেখা। ওই ৬০০ টাকাকে ১৫০ করেছি। বচন হাওড়া স্টেশনে কুলি কাকার। মহিলাদের দর কষাকষির অসাধারণ ক্ষমতা থাকে। ওই মুহূর্তে নিজেকে মনে হচ্ছিল সুন্দর দিদা। সুন্দর দিদার বয়স […]
বিশেষ ভ্রমণ
হঠাৎ ঝোঁকে ইতিহাসের কাজলাগড়ে
দেবাশিস দাস উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ। পাহাড়ি এলাকায় এক যাযাবর ব্যাধ জাতির বাস। দলপতির নাম গোবর্ধন। একদিন খাবারের সন্ধানে দলপতির নির্দেশে সমর্থ পুরুষরা বেড়িয়ে পড়ল মৃগয়ায়। বহু স্থানে প্রচুর শিকারের পর সেই দল এসে উপস্থিত হল বর্তমান ভগবানপুরের সুজামুঠা নামের একটা জায়গায়। তখন সুজামুঠা জংলা একটা জায়গা। চারিদিকে জঙ্গল আর সেখানে নানা পশুপাখির বাস। দলপতি সামনে এক […]
আদি মানবের লালজলে গরবিনী ময়ূরী
দীপক দাস ‘‘ময়ূরগুলো আপনাদের চিনতে পারছে না। বাইরের লোক ভাবছে। ওই যে আপনারা প্যান্ট-জামা পরে আছেন।’’ বলছিলেন পথচারী এক প্রৌঢ়। অবাক হয়ে গেলাম চারজন। গাড়ির চালক শিবু কতটা অবাক হল বোঝা গেল না। তবে বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়েছে সেটা বুঝতে পেরেছি। কারণ শিবুই প্রথমে ‘মোর’, ‘মোর’ চিৎকারে আমাদের শেষ বিকেলের ঝিমিয়ে পড়া সফরটাকে আবার চাঙ্গা […]
দু’চাকায় বরন্তি, চারচাকায় চরকি— দ্বিতীয় পর্ব
দীপশেখর দাস পরেরদিন ঘুম ভাঙতে দেরি হল। আগের রাতের ঘুমহীনতা আর সারাদিনের চরকিপাক বেশ ক্লান্ত করেছিল। ১০টা নাগাদ সাইকেলের দোকানে পৌঁছলুম। আমাদের ৭টার পর যেতে বলেছিলেন সাইকেল দাদা। দেরি দেখে চিন্তান্বিত হয়েছিলেন বোধহয় একটু। না হওয়ারও কিছু ছিল না। আমরা না এলে খানিকটা লোকসানই হত। গ্রামে আর সাইকেল ভাড়া কে নেয়! জুতসই চারটে সাইকেল নিয়ে […]
দু’চাকায় বরন্তি, চারচাকায় চরকি
দীপশেখর দাস ২০১৩ থেকে ২০১৫। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিখ্যাত চার কুমার অরিজিৎ (হ্যান্ডসাম), শুভ (কচি), জুয়েল (রত্নকুমার) আর আমি (ডাকনাম কেউ দেয়নি। দিলেও আমায় জানায়নি)। যদিও জুয়েলকে আমি ‘কুমার’ উপাধি দিতে রাজি ছিলুমনি। কিন্তু…রত্নকুমারই রয়ে গেল। গল্পটা ২০১৭। আমাদের কুমার উপাধি আরও জোরদার হয়েছে। চার জুড়িদারি মিলে ঠিক হল একটা ছোট ট্যুর হবে। ডিসেম্বর […]
মাহি পোলাও হয়ে গেল মাহি বিরিয়ানি
ফারুক আব্দুল্লাহ মাছ মুর্শিদাবাদবাসীর প্রিয় আমিষ হলেও নিজামত পরিবারের রসুইখানায় মাছের তেমন যাতায়াত ছিল না বললেই চলে। তবে নিজামত পরিবারে মাছ একেবারে অচ্ছুৎও ছিল না। আঞ্চলিকতার প্রভাবে নবাবদেরও মাঝে মাঝে মাছ খেতে ইচ্ছে করত। ফলে নবাবি হেঁশেলের মাছ প্রবেশ করত। তবে সেখানেও শর্ত ছিল। শুধুমাত্র আঁশওয়ালা মাছই নবাবি রসুইখানায় প্রবেশাধিকার লাভ করেছিল। নবাবি রসুইখানায় বাবুর্চিরা […]
পিছু নিয়েছিলেন বিভূতিভূষণ
রবিশঙ্কর দত্ত দু’একটা চ্যাপ্টা, বেশিরভাগই গোল। ময়দার তৈরি কাঠি। চিনির রসে ডুবিয়ে তোলা। এই তো কটকটি। সেই কটকটি। ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে খবরের কাগজের সেই ঠোঙা ভরা কটকটি মুহূর্তে শেষ। একটু আগে গুড়েরটা নিয়ে ঘুরে, হেঁকে গেলেন আরেকজন। সে কাঠির রং আলাদা। লাল বললে বোঝা যাবে না। গেরুয়া মতো। তাতে মিষ্টিটা একটু বেশিই। দশ টাকা শ। […]
জার্সির জোরে তিন জেলায়
যথা ইচ্ছা তথা যা জার্সির একটা আলাদা কেতা আছে। সে তো মাঝে মাঝেই টের পাওয়া যায়। সেই কেতার কারণেই গ্রুপেরও একটা জার্সির দরকার বলে আলোচনা চলছিল কয়েক মাস ধরে। নানা কার্যকারণে তা হয়ে উঠছিল না। কিন্তু শেষপর্যন্ত বাস্তবায়িত হল অনেকদিনের চেষ্টায়। গ্রুপের বড় বড় কাজগুলো উদযাপনের জন্য আমরা সফরে বেরোই। যেমন ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর […]
ছুটি পাই মিষ্টি খাই
দীপক দাস লোকাল গাইডেরই গাইডেন্স লাগবে। স্টেশন থেকে বেরিয়ে ক্রমশ খোঁচাচ্ছিল কথাটা। শরীরী ভাষায় মোটেও আত্মবিশ্বাস নেই। শেষপর্যন্ত তিনি বলেই ফেললেন, ‘‘এখানে আমরা মার্কেটিং করতে আসি। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় চিনি না।’’ গাইডের এমন বয়ানে খুশি আর ‘কী মুশকিল!’— দু’টো ভাবই মনে ঘাই মারল। খুশির কারণ, গাইডের গাইডেন্সের অভাব ধরতে পারা। শার্লক হোমসের মতো লাগছিল নিজেকে। কোনও […]
মহাকালের পথে
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় সমান্তরাল আর খরস্রোত কখনও একসঙ্গে চলে না। সমতলভূমি এবড়োখেবড়ো হলেও পাথর গড়ায় না। সেখানে যতক্ষণ না ঢাল এসে পড়ছে ততক্ষণ জীবনে স্রোত নেই। গড় গড় করে যখন শব্দ হতে শুরু করবে, তখন আর জীবনের হিসাব কষার সময় থাকবে না। সে জীবন ঢালের জীবন। শীতের ধূসর বিকেলে এমন এক ঘাস জমির ঢালে গিয়ে পড়লাম। […]