দীপক দাস ১৯৩৮ সালের ১১ অগস্টের একটি প্রচারপত্র। একটা মিষ্টির দোকানের উদ্বোধন হবে। দোকানটা আসলে এক সংস্থার শাখা। খুলবে শিয়ালদহে। নতুন দোকানের প্রচারের জন্যই এই প্রচারপত্র। তাতে লেখা ছিল, ‘বাংলা ও বাঙ্গালীর বৃহত্তম মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান’। প্রচারপত্রে আরও লেখা ছিল, ‘ভারতের সর্বত্র এবং বাহিরে সরবরাহ হইতেছে’। যেদিন প্রথম এই প্রচারপত্রটির বয়ান গোচরে আসে সেদিন বক্ষদেশ ৫০ […]
খাদ্য সফর
প্রবাসে খাদ্যের বশে
দীপক দাস মাংসের বাটিতে উঁকি মারছে রসুনটা। গাঢ় ঝোল, মাংসের টুকরো আর আলুর মাঝে অল্প মাথা জাগিয়ে রাখা রসুনটাকে মনে হচ্ছিল যেন সমুদ্র থেকে মাথা তোলা মৈনাকের চুড়ো। একটু অবাক হয়েছিলাম। মাংসের পিঁয়াজ, রসুন থাকবে। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ তো আর দেব-দেবীর কাছে উৎসর্গ করা ছাগমেধ নয় যে পিঁয়াজ-রসুন বাদ পড়বে। বলির মাংসে […]
মাহি পোলাও হয়ে গেল মাহি বিরিয়ানি
ফারুক আব্দুল্লাহ মাছ মুর্শিদাবাদবাসীর প্রিয় আমিষ হলেও নিজামত পরিবারের রসুইখানায় মাছের তেমন যাতায়াত ছিল না বললেই চলে। তবে নিজামত পরিবারে মাছ একেবারে অচ্ছুৎও ছিল না। আঞ্চলিকতার প্রভাবে নবাবদেরও মাঝে মাঝে মাছ খেতে ইচ্ছে করত। ফলে নবাবি হেঁশেলের মাছ প্রবেশ করত। তবে সেখানেও শর্ত ছিল। শুধুমাত্র আঁশওয়ালা মাছই নবাবি রসুইখানায় প্রবেশাধিকার লাভ করেছিল। নবাবি রসুইখানায় বাবুর্চিরা […]
ছুটি পাই মিষ্টি খাই
দীপক দাস লোকাল গাইডেরই গাইডেন্স লাগবে। স্টেশন থেকে বেরিয়ে ক্রমশ খোঁচাচ্ছিল কথাটা। শরীরী ভাষায় মোটেও আত্মবিশ্বাস নেই। শেষপর্যন্ত তিনি বলেই ফেললেন, ‘‘এখানে আমরা মার্কেটিং করতে আসি। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় চিনি না।’’ গাইডের এমন বয়ানে খুশি আর ‘কী মুশকিল!’— দু’টো ভাবই মনে ঘাই মারল। খুশির কারণ, গাইডের গাইডেন্সের অভাব ধরতে পারা। শার্লক হোমসের মতো লাগছিল নিজেকে। কোনও […]
মুর্শিদাবাদে মনোহরা অভিযান
ফারুক আব্দুল্লাহ অনেক দিন থেকেই ইচ্ছে ছিল মনোহরা খাওয়ার। আসলে মুর্শিদাবাদের মানুষ হয়েও এতদিন জেলার এই জনপ্রিয় মিষ্টির স্বাদ আস্বাদন করার সুযোগ আমার হয়নি। অবশ্য তাতে আমি যথেষ্ট লজ্জিতও। কিন্ত ইচ্ছে থাকলেও তা পূরণের সুযোগ তেমন হয়নি। চেষ্টা যে একেবারে করিনি তা নয়। কিন্ত সেই চেষ্টা কোনওবারই সাফল্যের মুখ দেখেনি। তাই গত বছরের নভেম্বর মাসে […]
বালমিঠাই বনাম রসকদম্ব
দীপক দাস মিষ্টি নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করতে হবে কোনওদিন ভাবিনি। সাহিত্যে একটা তুলনামূলক শাখা হয়। পড়াশোনা করে ডিগ্রিও পাওয়া যায়। এক সময় খুব ইচ্ছেও ছিল পড়ার। কিন্তু নম্বরে কুলিয়ে উঠতে পারিনি। ফলে…তুলনামূলক মিষ্টি। গোলটা বাঁধিয়েছে বাল মিঠাই। উত্তরাখণ্ডের মিষ্টি। আসলে আলমোড়ার। আলমোড়ার দু’টো মিষ্টি স্পেশাল। তার একটা হল বাল মিঠাই। না, এর মধ্যে আলমোড়ায় যাওয়া […]
ছানাবড়ার ছুটোছুটিতে দইয়ের ঝুড়ি
দীপক দাস ঘাঁটি গেড়েছিলাম ওমরাহ গঞ্জে। আমি আর ইন্দ্র। জায়গার নাম শুনেই মালুম অভিজাত এবং ক্ষমতাবানদের এলাকা। নবাবি আমলের আমির ওমরাহ থাকতেন এখানে। দিল্লির কনট প্লেসের মতো। ভাবছেন নিশ্চয় নবাবি খানা খেতে ঘাঁটি গেড়েছি আমরা? ভাবনার জন্য দোষ দেওয়া যায় না। সঙ্গে যখন ইন্দ্র আছে তখন এমন ভাবনাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা নবাবি খানার খোঁজে ওমরাহ […]
সরভাজা-সরপুরিয়া ভায়া পান্তুয়াঘাট
দীপক দাস তরকারিতে এক টুকরো পটল পেলাম। কচুরির টুকরো দিয়ে কিছুটা তরকারি তুলে নিতে বেরিয়ে এল বরবটি খণ্ড। বেরিয়েছি খাদ্য সফরে। নানা ধরনের মিষ্টির খোঁজে। সকাল ১০টা নাগাদ দাঁড়িয়ে আছি একটা মিষ্টির দোকানেই। কিন্তু আমরা মিষ্টি খাচ্ছি না। খাচ্ছি কচুরি আর তরকারি। অধিনায়কের মানা। ওঁর সফর-কৌশল বলছে, আমরা ফেরার সময়ে নেমে মিষ্টি খাব। এবারের খাদ্য […]
নবাবজাদার প্রেমের বাখরখানি, নবাবের শাহি টুকরা
ফারুক আবদুল্লাহ বাড়ি মুর্শিদাবাদ। ইসলামপুর নামে একটি স্থানে। লোকে তো মুর্শিদাবাদ মানেই নবাবি কাণ্ডকারখানা বোঝেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদ মানে কি শুধু শাহি ইমারত, ইতিহাস? জেলা জুড়ে ছড়িয়ে আছে কত খাবার। আজ তারই কয়েকটা চাখা যাক। স্পঞ্জের মিষ্টি মুর্শিদাবাদের মিষ্টান্নের মধ্যে স্পঞ্জের রসগোল্লা অন্যতম। এই রসগোল্লা বর্তমানে অবলুপ্তির পথে। আজ থেকে প্রায় ৪০-৫০ বছর আগে জেলার সদর […]
মুগের জিলিপির উৎস সন্ধানে
দীপক দাস গুরুর অভাব পূরণ করে দিল শিষ্য। আমতা লোকাল গুড়গুড়িয়ে ঢুকছে বড়গাছিয়া স্টেশনে। আমরা তিনজন প্ল্যাটফর্মের সিঁড়ির মুখে। হঠাৎ দেখি গার্ডবাবু নেই। দীপুকে বলতেই ও বাজখাঁই গলায় ‘সৌগত সৌগত’ করে চিৎকার শুরু করল। ফিরতি কোনও সাড়া নেই। আসলে তরঙ্গে মিলছিল না। মিলবে কী করে! গার্ডবাবু কবেই ওর সৌগত নাম ভুলেছে। অফিসে ওকে নিশ্চয় পালবাবু […]